রেডিও জাপানের ৫৮ বছর
হাসান মীর
![]() |
হাসান মীর |
জাপানের প্রাচীনতম সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান NHK (Nippon Hoso Kyokai বা ইংরেজিতে Japan Broadcasting Corporation)' এর অঙ্গ সংগঠন রেডিও জাপানের বাংলা সম্প্রচারের ৫৮ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ তেসরা এপ্রিল। আপনারা জানেন জাপানিরা তাদের নিজেদের দেশটাকে বলে নিপ্পন (Nippon ) বা নিহন ( Nihon) যার অর্থ সূর্য থেকে সৃষ্ট আর এশিয়ার পূর্বপ্রান্তের দেশ বলে আমরা জাপানকে বলি সূর্যোদয়ের দেশ, অর্থাৎ যে দেশে প্রথম সূর্য ওঠে।
জাপানে সরকারি উদ্যোগে সম্প্রচার ব্যবস্থার সূচনা ১৯২৬ সালের ৬ই অগাস্ট তখন নাম ছিল রেডিও টোকিও। এরপর বিধিবদ্ধ আইনের আওতায় NHK নামে যাত্রা শুরু হয় ১৯৩৫ সালের পয়লা জুন। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয় এবং দেশটি আমেরিকার দখলে চলে যাওয়ায় ছয় বছরের বেশি NHK এর সম্প্রচার বন্ধ ছিল ১৯৫২ সালে পুনরায় এর যাত্রা শুরু হয়।
বর্তমানে NHK এর রয়েছে একাধিক টিভি চ্যানেল (NHK World স্যাটেলাইট চ্যানেলে বাংলাদেশেও দেখা যায় ) আর রেডিও জাপান নামে রেডিওর হোম সার্ভিস, FM আর SW রেডিও। শর্টওয়েভে রেডিও জাপান বাংলা, হিন্দি উর্দুসহ মোট ১৮ টি ভাষায় অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। বাংলা অনুষ্ঠান শর্টওয়েভে বাংলাদেশে সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ৭-৪৫ মি. এবং এফ এম ব্যান্ডে ৭ টি বিভাগীয় শহরে রাত ৯.০০ টা থেকে ৯.৪৫ পর্যন্ত শোনা যায়। জাপানে পরীক্ষামূলক TV সম্প্রচার শুরু হয়েছিল ১৯৫০ সালে।
বর্তমানে NHK এর রয়েছে একাধিক টিভি চ্যানেল (NHK World স্যাটেলাইট চ্যানেলে বাংলাদেশেও দেখা যায় ) আর রেডিও জাপান নামে রেডিওর হোম সার্ভিস, FM আর SW রেডিও। শর্টওয়েভে রেডিও জাপান বাংলা, হিন্দি উর্দুসহ মোট ১৮ টি ভাষায় অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। বাংলা অনুষ্ঠান শর্টওয়েভে বাংলাদেশে সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ৭-৪৫ মি. এবং এফ এম ব্যান্ডে ৭ টি বিভাগীয় শহরে রাত ৯.০০ টা থেকে ৯.৪৫ পর্যন্ত শোনা যায়। জাপানে পরীক্ষামূলক TV সম্প্রচার শুরু হয়েছিল ১৯৫০ সালে।

প্রথম ঘোষক বা পাঠক নির্বাচিত হলেন শেখ জালাল নিজেই। তারিখটি ছিল ১৯৬১ সালের তেসরা এপ্রিল। (এরপর দৈনিক আধ ঘন্টা এবং ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে কিছুদিনের জন্য অতিরিক্ত আধঘণ্টার প্রভাতী অধিবেশন চালু হয়েছিল। এখন প্রচারিত হচ্ছে ৪৫ মিনিটের অনুষ্ঠান )।
শেখ জালাল পরবর্তীকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপালন করেছেন। ২০০১ সালে রেডিও জাপানের বাংলা বিভাগের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকার আগারগাঁয়ে বাংলাদেশ বেতার ভবনের সম্মেলন হলে যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল, সেখানে তার সাথে আমার দেখা ও কথা হয়। সেদিন তিনি স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে পুরনো দিনের গল্প শুনিয়েছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে আমার আগে রেডিও জাপানে কর্মরত ফারুক হোসেনও অংশ নেন। (আমি রেডিও জাপানের বাংলা বিভাগে কাজ করেছি ফেব্রুয়ারী. ১৯৮৮ থেকে অগাস্ট ১৯৯১ পর্যন্ত) । আমি যেসব অনিয়মিত শিল্পী/ উপস্থাপকদের সঙ্গে কাজ করেছি তাদের মধ্যে অনোয়ারুল করিম, অজন্তা গুপ্ত আর নাজনীন রহমান এখনো রয়েছেন বলে জানি। ইসকান্দার আহমদ চৌধুরী প্রয়াত, কল্যাণ দাসগুপ্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আর জয়শ্রী চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় অবসর জীবন কাটাচ্ছেন । আমি যখন ছিলাম, রেডিও জাপানের দক্ষিন- এশিয়া বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন হিরোফুমি সাতো। বাংলা বিভাগের প্রধান ছিলেন কাজুমা হানাওয়া (অবসরপ্রাপ্ত) আর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ছিলেন কাজুহিরো ওয়াতানাবে। মিঃ ওয়াতানাবে অবসরগ্রহণের পর সম্ভবত এখনও বাংলা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক হিসাবে যুক্ত রয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি টোকিও বিদেশী ভাষা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাভাষার খণ্ডকালীন শিক্ষকের দায়িত্বপালন করে থাকেন। তাদের সবাই এবং এখন বাংলা বিভাগের সঙ্গে জড়িত সকলকে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা বার্ষিক উপলক্ষে আমার আগাম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। রেডিও জাপানের পরমায়ু শতগুণ বৃদ্ধি পাক।
লেখাটি Wave Surfers' Association, Bangladeshএর ত্রৈমাসিক DX-NET প্রকাশনার April-June 2019 (V-13, E-02) সংখ্যায় প্রকাশিত।
হাসান মীরের আরও লেখা: ধান ভানতে শীবের গীত